• English
  • ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই?’

    ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, বুধবার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃক ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই?—শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দেশ-বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সূচনা। প্রথমে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক জনাব সিহাব উদ্দিন সুমন। তারপর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ভাবনা তুলে ধরেন সিএসসি বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিব মিয়া—ছেয়েছেন ‘মুক্তি : দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির’; অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা দিয়েছেন ভাবনা : ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা’, বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি বিভাগ চেয়ারম্যান জনাব শোভন রায়—জানিয়েছেন : ‘বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই হবে।’ বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব আঙ্গুর হোসেন—মেলে দিয়েছেন : ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের মহত্ব।’

    এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে অন্তত দশটি সেমিনার আয়োজিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা শক্তিশালী লাইব্রেরি থাকবে। গবেষণার তহবিল থেকে শিক্ষকরা নিয়মিত গবেষণা-ভাতা পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত জার্নাল প্রকাশিত হবে। সরকারি কোনো আধিপত্য থাকবে না বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতকোত্তর পড়াশোনার সিলেবাস যেন গবেষণা-নির্ভর হয় ইত্যাকার বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন। তিনি স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত হবে। বক্তব্য রাখেন পরিবেশ-বিজ্ঞানী ও জলবায়ু-বিশেষজ্ঞ ড. আহসান উদ্দিন আহমেদ। জানান, প্রকৃতির মহত্বের সাথে শিক্ষার্থীর সংযোগ। বলেন, ‘গোষ্ঠী রেষারেষিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চাই। আমরা চাই আকাশ দেখার আনন্দ, মুক্ত ভাবনার আনন্দ। বিশ্ববিদ্যালয় হবে উন্মুক্ত জ্ঞান চর্চার জায়গা। মুক্ত চিন্তার চাষবাস চাই। একটা বিদ্যালয় যখন পুরো বিশ্ব নিয়ে ভাবতে শিখায় তখন ঐ বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে। রাজনীতি মানে লেজুড়বৃত্তি নয়। অন্যায় সুবিধা দেওয়া এবং নেওয়া বন্ধ করতে হবে।’ সর্বোপরি তাঁর প্রত্যাশা : ‘আমার সন্তান যেন বাড়ে জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায়।’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি আলোচনা করেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের গতিপথ নিয়ে। আকাঙ্ক্ষা করেন, ‘আমি এমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই, যেখানে সন্তানকে পড়ানোর জন্য বাবা-মা মুখিয়ে থাকবে।’
    অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মো. নুরুল হক শুনিয়েছেন, বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর কথা। আশা রাখেন, ‘আমি এমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই না—যে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো কার্টুনিস্ট এমন কার্টুন আঁকবে না যে, এই গেট দিয়ে মানুষ আর ঐ গেট দিয়ে দানব বেরোচ্ছে! আমি ঐ বিশ্ববিদ্যালয় চাই, যে বিশ্ববিদ্যালয় যাকেই ঢোকাক না কেন সে যেন মানুষ হয়ে বের হতে পারে।’ অর্থনীতিবিদ ও বিশিষ্ট সমাজবিশ্লেষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে জানিয়েছেন, মানুষের চিন্তাগত বৃদ্ধিই প্রকৃত উন্নয়ন। বলেছেন, ‘জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখলেই উন্নয়ন বোঝা যায় না। জিডিপি প্রবৃদ্ধি কীসের ওপর হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে।’ দিয়েছেন—শিক্ষার্থীদের সর্বজনের হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা এবং প্রশ্ন করতে শেখার মন্ত্র। সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কোনো দখলদারি প্রভাব বিস্তারের জায়গা নয়। আমরা তেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই, যে বিশ্ববিদ্যালয় হবে সত্যিকারার্থে বৈশ্বিকজ্ঞানের আধার। যে বিশ্ববিদ্যালয় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করবে—আমি সেই স্বপ্ন দেখাতে চাই শিক্ষার্থীদের।’ সর্বোপরি তাঁর বক্তব্যে ‘শিক্ষা ও গবেষণা-ভিত্তিক ক্যাম্পাস গড়ার’ প্রতিশ্রুতি প্রতীয়মাণ হয়।

    (ড. সাদ্দাম হুসাইন)

    টিচার ইন চার্জ (জনসংযোগ দপ্তর) ও

    প্রভাষক, বাংলা বিভাগ

    শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা

    ইমেইল:sadhossain94@gmail.com

    Copyright © 2021 Sheikh Hasina University, Netrokona. All rights reserved. Developed and Maintained by: SHU ICT Cell