জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস-২০২৪’ উদযাপন
- Jan 10, 2024
- [post-views]
নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা উদযাপন করলো ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস-২০২৪’। বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম কবীর। উপাচার্য মহোদয়ের সাথে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন পর্বে অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক জনাব মিহির চক্রবর্তী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের পর উপাচার্য মহোদয় মু্ক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ ও সিএসই বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান মহোদয়গণের নেতৃত্বে বিভাগীয় শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম কবীর স্যারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে অলি উল্লাহর নেতৃত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। জাতীয় সংগীত শেষে পাঠ করা হয় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অনস্বীকার্য অবদানের কথা উল্লেখ পূর্বক ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তান মুক্ত স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের তথ্যসমৃদ্ধ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন আলোচনানুষ্ঠানের স্বাগত বক্তা।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক বিজয়। বিজয় তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত সকল অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি ও সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান জানান এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করেন।কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের শাখা কর্মকর্তা জনাব টুম্পা চক্রবর্তী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের বঙ্গবন্ধুর অকুণ্ঠ আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবোজ্জ্বল স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিএসই বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মালা রানী বর্মন। অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব শোভন রায়ের আলোচনায় উঠে আসে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাবর্তনের অনিবার্যতা। ইংরেজি বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব হাফসা আক্তার বলেন, ‘‘১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি যদি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন না করতেন তাহলে ঘরে ঘরে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত। কারণ তখনো বাঙালির হাতে অস্ত্র ছিল। তখনো মিত্রবাহিনী ফিরে যায়নি ভারতে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করেছে ঠিক কিন্তু চুড়ান্ত বিজয় লাভ করে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি স্বাধীন স্বদেশে বঙ্গবন্ধু প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে।” সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং বিশ্বজনীনতা তুলে ধরেন আলোচনায় অংশ নেন বাংলা বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব আঙ্গুর হোসেন। তিনি বলেন, “১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে যখন কলকাতায় যেতে বলা হয়েছিল তখন তিনি অসম্মতি জানিয়ে বলেছিলেন, কলকাতায় গেলে আমার দেশে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যাবে। আমি আমার দেশে ফিরে যেতে চাই এবং সূর্যের আলোয় আমার দেশের মানুষদের দেখতে চাই।” বাঙালি জাতিকে এতটাই ভালোবাসতেন বঙ্গবন্ধু।
বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অগাধ ভালোবাসা এবং আস্থার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের ইতিহাসে ১০ই জানুয়ারির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক জনাব মিহির চক্রবর্তী। তিনি বলেন,‘‘আমরা বাংলাদেশ বেতারে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ফিরে আসার সংবাদ পেয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের পর ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এদেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষেরা প্রার্থনা করছিলেন বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার জন্য।” অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম কবির তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে স্ব-চক্ষে দেখার স্মৃতিচারণ করেন। সভাপতির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য বলেন,“খুব কাছে থেকে দেখেছি বঙ্গবন্ধুকে। তাঁর শরীরে দেখেছি আঘাতের চিহ্ন। যখনই তাঁকে স্মরণ করি তাঁর মুখটা যতটা না মনে পড়ে তার চেয়ে বেশি মনে পড়ে সেই আঘাতের চিহ্ন। তিনি যখন পাকিস্তান কারাগারে ছিলেন তাঁর ফিরে আসার জন্য এবং সুস্থ থাকার জন্য হিন্দুরা তাঁর মূর্তি বানিয়ে সন্ধ্যা পূজা দিয়েছিলেন। মুসলিমরা নফল নামাজ ও রোজা রেখেছিলেন।”
আলোচনা সভা শেষে সকল শহিদের স্মরণে দোয়া পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার জনাব আলমগীর হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন পহেলী দে।
কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে-
(এনামুল হক)
জনসংযোগ কর্মকর্তা
শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা
ফোন: 01975-805368